পদ কাকে বলে? পদ কত প্রকার? পদের প্রকারভেদ কি কি?
নাম পদ কাকে বলে? ক্রিয়াপদ কাকে বলে?
পদ কাকে বলে?
“পদ’ শব্দটির ব্যুৎপত্তি এরকম, √পদ্ + অ – পদ। মানুষ মনের ভাব প্রকাশ করে বাক্যের সাহায্যে । কয়েকটি শব্দ মিলে একটি বাক্য হয় । আবার এ বাক্যের প্রতিটি শব্দই একেকটি পদ। বিভক্তিযুক্ত শব্দকে পদ বলে। বাক্যে ব্যবহৃত প্রত্যেকটি শব্দ এক একটি পদ। আজকের আর্টিকেলে আমরা বিস্তারিত আপনাদের জানাতে যাচ্ছি যে পদ কাকে বলে? পদ কত প্রকার? পদের প্রকারভেদ কি কি? চলুন শুরু করি।
পদ কত প্রকার বা পদের প্রকারভেদ
পদ প্রধানত দুই প্রকার_
- নামপদ
- ক্রিয়াপদ।
নামপদ কাকে বলে?
শব্দ বা প্রাতিপদিকের সঙ্গে বিভক্তি যুক্ত হয়ে যে পদ গঠিত হয়, তাকে নামপদ বলে।
ক্রিয়াপদ কাকে বলে?
ধাতুর সঙ্গে বিভক্তি যুক্ত হয়ে যে পদ গঠিত হয়, তাকে ক্রিয়াপদ বলে।
নামপদ কত প্রকার?
নামপদ চার প্রকার-
১. বিশেষ্য,
২. বিশেষণ,
৩. সর্বনাম,
৪. অব্যয়।
বিশেষ্য পদ কাকে বলে?
সংজ্ঞা : বাক্যের মধ্যে ব্যবহৃত যে সমস্ত পদ দ্বারা কোন ব্যক্তি, বস্তু, স্থান, কাল, জাতি, সমষ্টি, কর্ম, ভাব এবং গুণের নাম বুঝায়, তাদেরকে বিশেষ্য পদ বা নামপদ বলে।
বিশেষ্য পদ কত প্রকার?
বিশেষ্য পদ ০৬ প্রকার।
- নামবাচক বিশেষ্য
- জাতিবাচক বিশেষ্য
- বন্তুবাচক বিশেষ্য
- সমষ্টিবাচক বিশেষ্য
- ভাববাচক বিশেষ্য
- গুণবাচক বিশেষ্য
নামবাচক বিশেষ্য কাকে বলে?
(বাক্তি, ভৌগোলিক স্থান বা সংজ্ঞা, গ্রন্থের নাম) যে বিশেষ্য পদ দ্বারা কোনো ব্যক্তি, স্থান, নদী, পর্বত, দেশ, শহর, গ্রাম, পুস্তক, সৌধ প্রভৃতির নাম বুঝায়, সেগুলোকে সংজ্ঞাবাচক বিশেষ্য বলে।
যেমন : ব্যক্তি : নজরুল, ওমর, আনিস।
ভৌগোলিক স্থান: ককেশাস অঞ্চল, মধ্যপ্রাচ্য, ইন্দোচীন ।
গ্রন্থের নাম : গীতাঞ্জলি, অগ্নিবীণা, বিশ্বনবী ।
জাতিবাচক বিশেষ্য কাকে বলে?
(এক জাতীয় প্রাণী বা পদার্থের সাধারণ নাম) যে বিশেষ্য পদ দ্বারা কোন এক জাতীয় প্রাণী, বস্তু বা বিষয়ের সকলকে বা প্রত্যেককে বুঝায়, তাকে জাতিবাচক বিশেষ্য বলে।
উদাহরণ : গরু, মানুষ, পাখি, ইংরেজ, হিন্দু, মুসলমান ।
বস্তুবাচক বিশেষ্য কাকে বলে?
(উপাদানবাচক পদার্থের নাম) যে বিশেষ্য পদ দ্বারা কোন বস্তু বা দ্রব্যকে বুঝায়, তাকে বস্তুবাক বিশেষ্য বলে।
উদাহরণ : চেয়ার, টেবিল, আলনা, চাউল, মাটি, চিনি, লবণ, পানি।
সমষ্টিবাচক বিশেষ্য কাকে বলে?
(কিছুসংখ্যক ব্যক্তি বা প্রাণীর সমষ্টি) যে বিশেষ্য দ্বারা জাতিবাচক বিশেষ্যের সমষ্টিকে বুঝায়, তাকে সমষ্টিবাচক বিশেষ্য বলে।
উদাহরণ : সভা, জনতা, সমিতি, পঞ্চায়েত, মাহফিল, দল ।
ভাববাচক বিশেষ্য কাকে বলে?
(ক্রিয়ার ভাব বা কাজের ভাব) যে সকল বিশেষ্য পদ দ্বারা ক্রিয়ার ভাব কিংবা কাজের ভাব প্রকাশিত হয়, তাদের ভাববাচক বিশেষ্য বলা হয় ।
উদাহরণ : যাওয়ার কাজ – গমন, দেখার কাজ – দর্শন, খাওয়ার কাজ – ভোজন, শোওয়ার কাজ – শয়ন।
গুণবাচক বিশেষ্য কাকে বলে?
(কোন বস্তুর দোষ বা গুণ) – যে বিশেষ্যপদ দ্বারা কোন বস্তুর দোষ বা গুণের নাম বুঝায়, তাকে গুণবাচক বিশেষ্য বলে।
উদাহরণ : সততা, জদ্রতা, নম্রতা, কুলীন, শালীন, মধুরতা, তারল্য, তিক্ততা, তারুণ্য, সৌন্দর্য, বীরতৃ।
বিশেষণ পদ কাকে বলে? বিশেষণ পদ কত প্রকার?
যে সকল পদ বিশেষ্য, সর্বনাম বা ক্রিয়াপদের দোষ, গুণ, প্রকৃতি, অবস্থা, সংখ্যা, পরিমাণ ইত্যাদি প্রকাশ করে, সেগুলোকে বিশেষণ পদ বলে।
অর্থাৎ, যা কোনো কিছুকে বিশিষ্ট করে বা ফুটিয়ে তোলে, তাকে বিশেষণ বলে।
যেমন : ফুলটি সুন্দর, মেয়েটি চঞ্চল, পনের বছর এখানে সুন্দর, চঞ্চল, পনের ইত্যাদি বিশেষণ পদ।
বিশেষণ পদের প্রকারভেদ বা কত প্রকার?
বিশেষণ পদ দু’ধরনের
[১] নাম বিশেষণ
[২] ভাব বিশেষণ ।
নাম বিশেষণ কাকে বলে?
যে বিশেষণ বিশেষ্য, সর্বনাম ও অব্যয় পদের গুণ, দোষ, অবস্থা, পরিমাণ, সংখ্যা ইত্যাদি প্রকাশ করে, তাকে নাম বিশেষণ বা বিশেষ্যের বিশেষণ বলে । (বিশেষ্য ও সর্বনাম পদকে বিশেষিত করে) ]
সর্বনামের বিশেষণ : বুদ্ধিমান তারা, অপরিচিত তুমি, নির্বোধ সে।
অব্যয়ের বিশেষণ : অত হয় হায় কিসের? শত ধিক তাকে । কী ঘোর মিশমিশে।
ভাব বিশেষণ কাকে বলে?
যে সমস্ত পদ বিশেষ্য এবং সর্বনাম ব্যতীত অন্যান্য পদগুলোকে বিশেষিত করে তাকেই ভাব বিশেষণ বলা হয়। (ভাব বিশেষণ-বিশেষ্য এবং সর্বনাম ভিন্ন অন্যপদগুলোকে বিশেষিত করে)
ভাব বিশেষণ তিন প্রকার । যথা :
১. ক্রিয়া বিশেষণ,
২. বিশেষণের বিশেষণ বা বিশেষণীয় বিশেষণ,
৩. অব্যয়ের বিশেষণ ।
ক্রিয়া বিশেষণ কাকে বলে?
যা দিয়ে ক্রিয়া সংঘটনের কাল, ভাব, বা রূপ নির্দেশ করে তাকেই ক্রিয়া বিশেষণ বলে।
উদাহরণ :
(ক) ক্রিয়া সংঘটনের ভাব : আস্তে আস্তে বায়ু বয়।
(খ) ক্রিয়া সংঘটনের কাল : পরে একবার এইদিকে এসো।
(গ) ক্রিয়া সংঘটনের স্থান : টি.এস.সির সামনে থেকো ।
বিশেষণের বিশেষণ কি?
নাম বিশেষণ বা ক্রিয়া বিশেষণকে বিশেষিত করে।
উদাহরণঃ
(ক) নাম- বিশেষণের বিশেষণ : অল্প একটু দুধ দাও। এ কারণে সে অতিশয় দুঃখিত ।
(খ) ক্রিয়া- বিশেষণের বিশেষণ : উড়োজাহাজ অতি দ্রুত চলে ।
৩. অব্যয়ের বিশেষণ :
(অব্যয়ের অর্থকে বিশেষিত করে)
উদাহরণ : ধিক তারে শতধিক নির্লজ্জ সে জন।
একই পদের বিশেষ্য ও বিশেষণরূপে ব্যবহার :
ভাল : বিশেষণরূপে__ভাল বাড়ি পাওয়া কঠিন ।
বিশেষ্যরূপে-_আপন ভাল কেনা চায়?
মন্দ : বিশেষণরূপে– মন্দ বাক্য বলা অনুচিত।
বিশেষ্যদূপে__এখানে কী মন্দটা তুমি দেখলে?
পুণ্য : বিশেষণরূপে– তোমার এ পুণ্য প্রচেষ্টা সফল হোক।
বিশেষ্যরূপে__পুণ্যে মতি হোক ।
নিশীথ : বিশেষণরূপে__আজি নিশীথ রাতে কে বাশি বাজায়?
বিশেষ্যরূপে__গভীর নিশীথে প্রকৃতি সুপ্ত মনে পড়ে তোমায়।
শীত : বিশেষণরূপে___শীতকালে দক্ষিণা সমিরণে হিম শীতল রাত কাটে।
বিশেষ্যরূপে___ শীতের সকালে চারিদিকে অন্ধকার।
সত্য : বিশেষণরূপে__সত্য পথে থেকে সত্য কথা বল।
বিশেষ্যরূপে__এর চেয়ে বড় কোন সত্য নেই।
সর্বনাম পদ কাকে বলে?
সাধারণত যা নামের আগে উল্লেখ করা হয়েছে এমন নাম বা বিশেষ্যের পরিবর্তে বসে তাই সর্বনাম ।
সর্বনামের পুরুষ
‘পুরুষ’ একটি পারিভাষিক শব্দ । বিশেষ্য, সর্বনাম ও ক্রিয়ারই মাত্র পুরুষ আছে। অব্যয় ও বিশেষণের কোন পুরুষ নেই।
ব্যাকরণে পুরুষ তিন প্রকার । যথা :
১. উত্তম পুরুষ,
২. মধ্যম পুরুষ
৩. নাম পুরুষ ।
উত্তম পুরুষ কাকে বলে?
বক্তা স্বয়ং নিজেই উত্তম পুরুষ । আমরা, আমি, আমাকে, বা আমাদের ইত্যাদি সর্বনাম শব্দ গুলো উত্তম পুরুষ ।
মধ্যম পুরুষ কাকে বলে?
প্রত্যক্ষভাবে উদ্দিষ্ট ব্যক্তি বা শ্রোতাই মধ্যম পুরুষ । তুমি, তোমরা, তোমাকে, তোমাদের, তোমাদিগকে, আপনি, আপনার, আপনারা, আপনাদের প্রভৃতি সর্বনাম শব্দ মধ্যম পুরুষ ।
নাম পুরুষ কাকে বলে?
অনুপস্থিত অথবা পরোক্ষভাবে উদ্দিষ্ট ব্যক্তি, বন্তু বা প্রাণীই নাম পুরুষ । সে, তারা, তাহারা, তাদের, তাহাকে, তিনি, তাকে, তারা, তাদের প্রভৃতি নাম পুরুষ । (সমস্ত বিশেষ্য শব্দই নাম পুরুষ)
অব্যয় পদ কাকে বলে?
যে সব পদের কোন ব্যয় কিংবা কোন প্রকার পরিবর্তন হয় না, তাদের অব্যয় পদ বলে।
ন ব্যয়=অব্যয়। অর্থাৎ, যে পদ সর্বদা অপরিবর্তনীয় থেকে কখনো বাক্যের শোভা বর্ধন করে, কখনো একাধিক পদের, বাক্যাংশের বা বাক্যের সংযোগ বা বিয়োগ সম্বন্ধ ঘটায়, তাকে অব্যয় পদ বলে।
উদাহরণ : ও, আর, এবং, কিন্তু, না, বা, অথবা, অপেক্ষা, পর্যন্ত, নতুবা, যদিও, তবুও, তথাপি, যদ্যপি, অর্থাৎ___এসব হল অব্যয় পদ।
অব্যয় পদ কত প্রকার?
অব্যয় পদ চার ধরনেরঃ
১. সমুচ্চয়ী অব্যয়
২. অনবয়ী অব্যয়
৩. অনুকার/ধ্বন্যাত্মক অব্যয়
৪. অনুসর্গ অব্যয়
সমুচ্চয়ী অব্যয় পদ কাকে বলে?
যে সমস্ত অব্যয় ‘শব্দের সাথে শব্দের’ অথবা “বাক্যের সাথে বাক্যের” সংযোজন, বিয়োজন বা সংকোচন ঘটায় তাদের সমুচ্চয়ী অব্যয় বলে। এটি বিভিন্ন প্রকারের হয়।
সংযোজক অব্যয় পদ কাকে বলে?
এ জাতীয় অব্যয় শব্দের সাথে শব্দের বা বাক্যের সাথে বাক্যের সংযোজন ঘটায়। যেমন- তুমি ও আমি সেখানে যাব ।
বিয়োজক অব্যয় পদ কাকে বলে?
এ জাতীয় অব্যয় শব্দের সাথে শব্দের বা বাক্যের সাথে বাক্যের বিয়োজন ঘটায় ।
যেমনঃ তুমি অথবা আমি সেখানে যাব ।
মন্ত্রের সাধন কিতবা শরীর পাতন ।
লেখাপড়া কর নতুনা ফেল করবে।
সংকোচক অব্যয় পদ কাকে বলে?
এ জাতীয় অব্যয় একাধিক পদকে বা একাধিক বাক্যকে একপদ বা একবাক্যে পরিণত করে ।
যেমন___ তুমি, সে ও আমি সেখানে যাব – আমরা সেখানে যাব । এ বাক্যেও” সংকোচক অব্যয় ।
অনন্বয়ী অব্যয় পদ কাকে বলে?
অন্বয় _ সম্পর্ক, অনবয় – সম্পর্কহীন।
যে সমস্ত অব্যয়ের সাথে মূল বাক্যের কোন সম্পর্ক নেই, তা কেবল বক্তার অনব্যয়ী অব্যয় বলে।
যেমন___ হায়! তার পিতা মারা গিয়েছে। এখানে ‘হায়’! অনবয়ী অব্যয় ।
- উচ্ছাস প্রকাশে : মরি মরি! কী সুন্দর প্রভাতের রূপ ।
- স্বীকৃতি বা অস্বীকৃতি জ্ঞাপনে : হ্যা, আমি যাব । না, আমি যাব না।
- সম্মতি প্রকাশে : আমি আজ আলবত যাব । নিশ্চয়ই পারব ।
- অনুমোদন বাচকতায় : আপনি যখন বলছেন, বেশ ত আমি যাব।
- সমর্থনসূচক জবাবে : আপনারা যা যা জানেন তা তো ঠিকই বটে।
- যন্ত্রণা প্রকাশে : উঃ! পায়ে বড্ড লেগেছে। নাঃ! এ কষ্ট অসহ্য
- ঘৃণা বা বিরক্তি প্রকাশে : ছি: ছি: তুমি এত নীচ।
- কী আপদ! লোকটা যে পিছু ছাড়ে না।
অনুকার বা ধ্বন্যাত্মক অব্যয় কাকে বলে?
যে সমস্ত অব্যয় ধ্বনির দ্যোতনা সৃষ্টি করে বা অনুরণন করে তাদের অনুকার
বা ধবন্যাত্মক অব্যয় বলে।
যেমন__ শন শন করে বাতাস বইছে, টপটপ করে বৃষ্টি পড়ছে।
একক প্রয়োগঃ শী করে তীরটা পাশ দিয়ে ছুটে গেল।
দ্বিরুক্ত প্রয়োগঃ প্রয়োগ : মাছি ভনভন করছে। শনশন করে বায়ু প্রবাহিত হচ্ছে।
বজ্র ধ্বনি__কড়কড়।
মেঘের গর্জন__গুড়গুড়।
বৃষ্টির তুমুল শব্দ__ঝমবঝম।
ঘোড়ার ডাক-_চিহি চিহি।
সিংহের গর্জন__গরগর।
স্রোতের ধ্বনি__কলকল।
অনুভূতিমূলক অব্যয়ও অনুকার অব্যয় শ্রেণিভুক্ত। যেমন :
ঝা ঝা (প্রখরতাবাচক), খা খা (শৃন্যতাবাচক), কচ্কচ্, কট্কট্, টলমল,
ঝলমল, চকচক, ছমছম, টনটন, খকহখট ইত্যাদি।
অনুসর্গ অব্যয় কাকে বলে?
তৃতীয়া অথবা পঞ্চমী বিভক্তির চিহৃগুলো যখন অনুসর্গ হিসেবে ব্যবহৃত হয় তখন তাদের অনুসর্গ অব্যয় বলে।
যেমন__ পিতা কর্তৃক পুত্র প্রহার হয়েছে।
তার দ্বারা এ কাজ হবে না।
অনুসর্গ অব্যয় ‘পদান্বয়ী অব্যয়” নামেও পরিচিত।
ক্রিয়াপদ কাকে বলে এবং প্রকারভেদ
যে পদ দ্বারা কোন কার্য সম্পাদন করা বুঝায়, তাই ক্রিয়াপদ। যে কোন ক্রিয়াপদে দুটো অংশ থাকে –
- ক্রিয়ামূল
- ক্রিয়া-বিভক্তি।
ভাব প্রকাশের উপর ভিত্তি করে ক্রিয়াপদ দুই একার-
- সমাপিকা ক্রিয়া :
- অসমাপিকা ক্রিয়া
সমাপিকা ক্রিয়া কি?
এ ক্রিয়াপদ দ্বারা বাক্যের পরিসমাপ্তি জ্ঞাপিত হয়।
উদাহরণঃ ছেলেরা খেলা করছে। এ বছর বন্যায় ফসলের ক্ষতি হয়েছে।
অসমাপিকা ক্রিয়া কি?
অসমাপিকা ক্রিয়াপদ দ্বারা বাক্যের পরিসমাপ্তি ঘটে না, বক্তার কথা অসম্পূর্ণ থেকে যায়।
উদাহরণ : প্রভাতে সূর্য উঠলে_____________।
আমরা হাত মুখ ধুয়ে______________।
আমরা বিকেলে খেলতে___________।
কর্মের উপর ভিভি করে ক্রিয়াপদ তিন ধরনের-
- সকর্মক ক্রিয়া
- অকর্মক ক্রিয়া
- দ্বিকর্মক ক্রিয়া
সকর্মক ক্রিয়া কি?
যে ক্রিয়ার কর্মপদ আছে তাকেই সকর্মক ক্রিয়া বলে। যেমন__
সে বল খেলে – এখানে বল কর্মপদ।
মা শিশুকে দেখাচ্ছেন __ এখানে শিশুকে কর্মপদ।
অকর্মক ক্রিয়া কাকে বলে?
যে ক্রিয়ার কর্মপদ নেই তাকে অকর্মক ক্রিয়া বলে। যেমন__
আমরা রোজ বেড়াই । আমি চোখে দেখিনে।
দ্বিকর্মক ক্রিয়া কাকে বলে?
যে সকল ক্রিয়ার দুটো কর্মপদ রয়েছে তাকে দ্বিকর্মক ক্রিয়া বলা হয়।
যেমন__
আমি তাকে একটি গল্প বলব । মা শিশুকে চাদ দেখাচ্ছেন।
ক্রিয়ার কর্ম তিন প্রকার :
১. মুখ্য কর্ম;
২. গৌণ কর্ম;
৩. সমধাতুজ কর্ম।
মুখ্য কর্ম কাকে বলে?
কোন বাক্যের বস্তুবাচক কর্মটকে মুখ্যকর্ম বলে।
যেমন__ বাবা আমাকে একটি কলম দিয়েছেন।
এ বাক্যে, কলম হল মুখ্য কর্ম।
গৌণ কর্ম কাকে বলে?
কোন বাক্যের গ্রাণীবাচক কর্মটিকে গৌণকর্ম বলে।
যেমন : ভাই আমাকে একটি বই দিয়েছেন। এই ‘আমাকে’ হল গৌণকর্ম।
সমাধাতুজ কর্ম কাকে বলে?
কোন একটি বাক্যের ক্রিয়া এবং কর্ম যদি একই ধাতু হতে উৎপন্ন হয়, তবে সে বাক্যের কর্মটিকে সমধাতুজ কর্ম বলা হয় ।
যেমন__ সে খুব ভাল খেলা খেললো।
খুব এক ঘুম ঘুমিয়েছি।
আমাদের পিডিএফ বই কালেকশান গুলো পেতে |
প্রকৃতির দিক থেকে ক্রিয়াপদ : চার প্রকার
১. যৌগিক ক্রিয়া,
২. প্রযোজক ক্রিয়া,
৩. নামধাতুর ক্রিয়া,
৪. মিশ্র ক্রিয়া ।
যৌগিক ক্রিয়া কাকে বলে?
অসমাপিকা ক্রিয়াপদের সাথে সমাপিকা ক্রিয়াপদ মিলিত হয়ে একটি বিশেষ অর্থ প্রকাশ করলে তাকে যৌগিক ক্রিয়া বলে। অর্থাৎ, ১টি অসমাপিকা ক্রিয়া + ১টি সমাপিকা ক্রিয়া – যৌগিক ক্রিয়া।
যেমন__এখন সবাই মিলে দেশ গড়ে তোল ।
অনেক লোক এসে পড়ল।
প্রযোজক ক্রিয়া কাকে বলে?
যে ক্রিয়া নিজে কাজ না করে অন্যকে দিয়ে কাজ সম্পন্ন করায় তাকে প্রযোজক ক্রিয়া বলে ।
যেমন__
মা শিশুকে চাদ দেখাচ্ছেন।
শিক্ষক ছাত্রকে প্রহার করাচ্ছেন।
প্রযোজক কর্তা কাকে বলে?
যেসব ক্রিয়া প্রযোজনা করে, তাদের প্রযোজক কর্তা বলা হয়।
প্রযোজ্য কর্তা কাকে বলে?
যার মাধ্যমে ক্রিয়াটি অনুষ্ঠিত হয়, তাকেই প্রযোজ্য কর্তা বলে।
প্রযোজক কর্তা | প্রযোজ্য কর্তা | প্রযোজক ক্রিয়া |
মা
সাপুড়ে |
শিশুকে
সাপ |
চাঁদ দেখাচ্ছেন।
খেলায়। |
আরো পড়ুন- ধ্বনি কাকে বলে? ধ্বনি কত প্রকার?
আরো পড়ুন- শব্দ গঠন বলতে কি বোঝ? নতুন শব্দ গঠনের উপায় কি কি?
আরো পড়ুন- বাক্য কাকে বলে? একটি সার্থক বাক্যের কী কী গুণ থাকা আবশ্যক?
নামধাতুর ক্রিয়া কাকে বলে?
বিশেষ্য, বিশেষণ ও ধ্বন্যাত্মক অব্যয়ের সাথে ‘আ’ যুক্ত করলে নাম ধাতু পাওয়া যায়। নামধাতুর সাথে ক্রিয়া বিভক্তি যুক্ত হয়ে যে ক্রিয়াপদ গঠন করে, তাকে নামধাতুর ক্রিয়া বলে।
যেমন__
বেত + আ = বেতা, বেতা + ছে= বেতাচ্ছে,
শন শন + ছে = শনশনাচ্ছে।
মিশ্র ক্রিয়া কাকে বলে?
বিশেষ্য, বিশেষণ, বা ধ্বন্যাত্মক অব্যয়ের সাথে অন্য কোন ক্রিয়াপদ যুক্ত হলে যে ক্রিয়াপদ গঠিত হয় তাকে মিশ্র ক্রিয়া বলে।
যেমন___
বেত+মারছে = বেত মারছে
খুশি+ হলাম= খুশি হলাম।
বাক্যঃ তোমাকে দেখে আমি খুশি হলাম।
আজকের আর্টিকেলটি এখানেই শেষ করছি। কেমন লাগল “পদ কাকে বলে?” নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা?
ভাল লাগলে কমেন্টে জানান। এবন আপনাদের পচন্দের কোন বিষয় নিয়ে লিখার রিকোয়েস্ট করতে চাইলে কমেন্ট জানান।
One Comment