হিজড়া কাকে বলে? হিজড়া কত প্রকার? হিজড়া শিশু চিনার উপায়?
হিজড়া কাকে বলে? হিজড়া কত প্রকার? হিজড়া শিশু চিনার উপায়?
হিজড়া কাকে বলে? হিজড়া কোন লিঙ্গের?
আজকের এই পোস্টে হিজড়া নিয়ে আলোচনা করবো। এই পোস্টের মাধ্যমে জানা যাবে- হিজড়া কাকে বলে? হিজড়া কেন হয়? হিজড়া অর্থ কি? হিজড়া ইংরেজি শব্দ? হিজড়া শিশু চিনার উপায়? হিজড়া আইন ইত্যাদি।
হিজড়া কাকে বলে? হিজড়া কোন লিঙ্গের?
আববি হিজরত বা হিজরি শব্দ থেকে হিজড়া শব্দটি এসেছে। যার আভিধানিক অর্থ পরিবর্তন বা Migrate বা Transfer। শারীরিক ত্রুটির কারণে হিজড়াদের জন্ম। হিজড়ারা সমাজে সাধারণত ক্লীবলিঙ্গ হিসেবে বিবেচিত বা পরিচিত। পৃথিবীতে অনেক দেশেই হিজড়াদের পুরুষ বা মহিলা না বলে Third sex বা তৃতীয় লিঙ্গ হিসাবে অভিহিত করে। এছাড়াও হিজরাদের ট্রান্স জেন্ডার, খোজা, ট্রান্স জেন্ডার, হার্মাফ্রোডাইট, শিখণ্ডী, বৃহন্নলা ইত্যাদি নামেও অভিহিত করা হয়। তৃতীয় লিঙ্গের এই মানুষগুলোর জীবন সত্যিই মানবেতর।
কেন জন্ম হয় হিজড়া শিশু-
প্রকৃতপক্ষে হিজড়ারা যৌন প্রতিবন্ধী মানুষ। যারা ক্রোমোজমের ত্রুটি ও জটিলতার কারণে জন্মগতভাবে যৌন প্রতিবন্ধী হয়ে জন্ম নিয়েছে।
বিজ্ঞানের মতে, দুটি XX প্যাটার্ন ডিম্বাণুর সমন্বয়ে কন্যা শিশু জন্ম হয়। ভ্রূণের পূর্ণতার স্তর গুলোতে ক্রোমোজোম প্যাটার্নের প্রভাবে কন্যা শিশুর মধ্য ডিম্ব কোষ জন্ম নেয়। এই ডিম্ব কোষ থেকে নিঃসৃত হয় এস্ট্রোজেন হরমোন।
আবার একটি X এবং একটি Y প্যাটার্ন থেকে জন্ম নেয় ছেলে শিশু। ভ্রূণের পূর্ণতার স্তর গুলোতে ক্রোমোজোম প্যাটার্নের প্রভাবে ছেলে শিশুর মধ্যে অণ্ডকোষ জন্ম নেয়। এই অণ্ডকোষ থেকে নিঃসৃত হয় এন্ড্রোজেন।
তবে, ভ্রূণের বিকাশকালে নিষিক্তকরণ ও বিভাজনের কারণে অনেক সময় অস্বাভাবিক কিছু প্যাটার্নের সৃষ্টি হয় । যেমন, XXY, অথবা XYY। মূলত এই কারণে বিভিন্ন গঠনের হিজড়া শিশুর জন্ম হয়।
হিজড়া কত প্রকার- এদের শারীরিক গঠন কি?
বৈশিষ্ট্যের দিক থেকে হিজড়ারা তিন ধরনের হয়ে থাকে। নারী হিজড়াদের মধ্যে নারীসুলভ বৈশিষ্ট্য থাকলেও স্ত্রীজননাঙ্গ না থাকায় তাদের শারীরিক গঠন অস্বাভাবিক হয়ে থাকে আবার পুরুষ হিজড়াদেরও পুংজননাঙ্গ থাকেনা। যার ফলে তাদের শারীরিক গঠনও অস্বাভাবিক হয়ে থাকে। আবার অনেকের মধ্যে উভয় বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান থাকে।
তবে, বৈশিষ্ট বা বাইরে নারী বা পুরুষের যে বৈশিষ্ট্যে থাকুক না কেন হিজরারা নিজেদের নারী হিসেবেই বিবেচনা করে থাকে।
হিজড়া শিশু চিনার উপায়-
কোন শিশু জন্মগতভাবে হিজড়া হয়ে জন্ম নিয়েছে কিনা সেটা সহজেই চিনা সম্ভব। সেজন্য, একটি শিশু জন্মের পর পরেই শিশুর নাক, কান, চোখ, মলদ্বার, যৌনাঙ্গ ইত্যাদি ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। অনেক শিশু জন্ম নেওয়ার পর যৌনাঙ্গ দেখে ছেলে না মেয়ে তা বুছতে সমস্যা হয়। পরবর্তী সময়ে এরাই হিজড়া হয়। অবার অনেক শিশু ছোট বেলায় নিখুঁত মেয়ে বা ছেলে হিসেবে জন্ম নিলেও বয়ঃসন্ধিকালে এদের লিঙ্গান্তর ঘটে ছেলে বা ওমেয়ে হয়ে যায়। তবে, যতই লিঙ্গান্তর হোক না কেন এদের পূর্বের লিঙ্গের কিছু বৈশিষ্ট্য থেকে যায়।
বাংলাদেশ কত হিজড়া বসবাস করে-
বাংলাদেশ হিজড়াদের সংখ্যা পনের হাজার, মতান্তরে এর একটু বেশি সংখ্যক হিজড়ার বসবাস করে।
হিজড়া আইন ২০১৩
বাংলাদেশে ২০১৩ সালের নভেম্বরে মন্ত্রিপরিষদ সভায় অনুমোদিত সিদ্ধান্ত মোতাবেক ‘হিজড়া’দের ‘হিজড়ালিঙ্গ’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়। এতে বলা হয়, বাংলা ও ইংরেজি উভয় ক্ষেত্রেই ‘হিজড়া’ লেখা হবে- এর কোনো ইংরেজি অনুবাদ গ্রহণযোগ্য নয়। তাই, আমরা বলতে পারি হিজড়া ইংরেজি শব্দ হিজড়া।